কোরালক্যাল ডি এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক। না জেনে কিংবা ভুল নিয়মে এই ওষুধটি সেবন করলে হতে পারে মারাত্মক ক্ষতি। তাই ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে আজকের এই আর্টিকেলে দেখে নিন কোরালক্যাল ডি খাওয়ার নিয়ম এবং কোরালক্যাল ডি এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গুলো কি কি।

আশা করছি এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনারা প্রত্যেকে বুঝতে পারবেন এই ওষুধটি না জেনে খাওয়ার ফলে কি কি মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে চলুন আমরা আর দেরি না করে এবার তাড়াতাড়ি দেখে আসি কোরালক্যাল ডি এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
কোরালক্যাল ডি কেন খাওয়া হয়
কোরালক্যাল ডি কেন খাওয়া হয়?? কোরালক্যাল ডি হলো একটি জনপ্রিয় সাপ্লিমেন্ট যা মূলত হার আর দাঁতকে উন্নত করার জন্য খাওয়া হয়। কোরালক্যাল ডি শরীর থেকে ভিটামিন ডি এর ঘাট থেকে পূরণ করতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুন: মুখের পাতলা ত্বক মোটা করার ঘরোয়া উপায় ৭টি যা কাজে আসবেই
কোরালক্যাল ডি খাওয়া হয় শরীর থেকে ভিটামিন ডি এর খারতে পূরণ করার জন্য শরীরে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি দেখা দিলে হাড় এবং দাঁত দুর্বল হয়ে পড়ে। শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাবে প্রচুর চুল পড়তে শুরু করে।
শরীরে অতিরিক্ত ভিটামিন ডি এর অভাব তৈরি হলে অস্ট্রিঅপরেসিস হতে পারে অর্থাৎ হাড় ক্ষয়। হাড় ক্ষয় রোধ করতে নিয়মিত কোরালক্যাল ডি সেবন করতে হবে এটি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী আশা করছি আপনারা সকলে বুঝতে পেরেছেন কোরালক্যাল ডি কেন খাওয়া হয়।
কোরালক্যাল ডি এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
কোরালক্যাল ডি এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কি কি?? এই ওষুধ অতিরিক্ত খেলে কি কি ক্ষতি হতে পারে?? ভিটামিন ডি এর ঘাটতি দেখা দিলে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হয় সেই সমস্যা দূর করার জন্য মূলত ভিটামিন ডি সেবন করা হয় ভিটামিন ডি এর একটি অন্যতম কোম্পানি হলো কোরালক্যাল ডি।
তবে যদি ভুল নিয়মে কোরালক্যাল ডি সেবন করা হয় তাহলে স্বাস্থ্যের জন্য এটি মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে এমনকি অনেক সময় দেখা যায় ভিটামিন ডি ঔষধ সেবন করার ফলে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। কোরালক্যাল ডি এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো খুবই মারাত্মক তবে প্রত্যেকের শরীরে একই সমস্যা দেখা দিবে ব্যাপারটি কিন্তু এমন নয়।
আরো পড়ুন: ডি ব্যালেন্স ২০০০০ খাওয়ার নিয়ম যেভাবে খেলে পুরোপুরি উপকার পাবেন
প্রতিটি ঔষধের কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকে। এমনকি আমাদের চিনা পরিচিত ওষুধ নাপা এক্সট্রা এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে অর্থাৎ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই এমন ঔষধ খুঁজে পাওয়া খুব মুশকিল তবে কিছু কিছু ওষুধ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া খুব স্বাভাবিক হয় আর কিছু ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া খুব ক্ষতিকর হয়।
কোরালক্যাল ডি এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
- অতিরিক্ত কোষ্ঠকাঠিন্য
- কিডনিতে পাথর
- ঘনঘন প্রস্রাব
- শরীর অনেক বেশি দুর্বল হয়ে পড়া
- বমি বমি ভাব
- মাথা ঘোরা
- পাইলস
- পেট ফাঁপা
- গ্যাস
- বুকে জ্বালাপোড়া
কোষ্ঠকাঠিন্য
কোরালক্যাল ডি সেবন করার ফলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে প্রথমে দেখা যাবে কোষ্ঠকাঠিন্য।কোরালক্যাল ডি এর প্রাথমিক উপাদান হলো ক্যালসিয়াম কার্বনেট এটি মূলত শরীরে ক্যালসিয়াম আয়রন ছাড়তে শুরু করে যা ধীরে ধীরে হারে জমা হয় এবং এটি রক্তে কাজ করতে শুরু করে।
কোরালক্যাল ডি সেবন করার ফলে ক্যালসিয়াম আয়ন পেশির সংকোচন গুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করে এদের রক্তে বেশি ক্যালসিয়াম থাকার ফলে বেশি সংকোচন কিছুটা রিফ্লেক্স এবং স্থির হয়। এতে পানি বেশি বেশি শোষিত হতে থাকে যার ফলে গবেষণা তো দেখা গেছে যে দীর্ঘমেয়াদী এই কোরালক্যাল ডি সেবন করার ফলে মল শুকিয়ে যায় এবং অন্ত্র ধীরে ধীরে চলতে শুরু করে যার ফলে তৈরি হয় কোষ্ঠকাঠিন্য।
কিডনিতে পাথর
কোরালক্যাল ডি সেবন করার ফলে কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায় কারণ এই ওষুধের প্রধান একটি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হলো কিডনিতে পাথর তৈরি করা। এখন প্রশ্ন হল কেন কিডনিতে পাথর তৈরি হবে?? এমনিতে পাথর তৈরি হয় ক্যালসিয়াম অক্সালেট ইউরিক এসিডের জমাটের ফলে।
এখন গভীরভাবে ব্যাখ্যা দেয়া হবে কেন কোরালক্যাল ডি সেবন করলে কিডনিতে পাথর হয়?? কোরালক্যাল ডি এর প্রাথমিক উপাদান হলো ক্যালসিয়াম যার শরীরে ক্যালসিয়াম কার্বনেট কে বৃদ্ধি করতে শুরু করে কিডনিতে অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম ফিল্টার করতে থাকে এর ফলে কিডনি রক্ত থেকে অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম প্রসবের মাধ্যমে বের করে দিতে চাই কিন্তু প্রস্রাবে ক্যালসিয়ামের কনসেন্ট্রেশন ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করে।
আরো পড়ুন: রেসার কবুতর চেনার উপায় ১২ টি
এর ফলে প্রস্রাবের হার অনেক বেড়ে যায় এবং এই ক্যালসিয়াম আর অক্সালেট মিলে কিডনির মধ্যে অক্সালেট ক্রিস্টাল গঠন করে যাকে আমরা বলি পাথর। পাথর মূলত তৈরি হয় ক্যালসিয়াম আর অক্সালেট এর সমন্বয় এই দুইটি উপাদান মিলিত হয়ে ক্যালসিয়াম অক্সিলেট ক্রিস্টেল কিংবা পাথর তৈরি করে।
প্রথম অবস্থায় এই পাথরগুলো খুব ছোট ছোট আকারে থাকে তবে ধীরে ধীরে এগুলো বড় আকার ধারণ করতে থাকে যদি পাথর এর আকার অনেক বেশি বড় হয় তাহলে অপারেশন ছাড়া আর অন্য কোন মাধ্যম নেই এর থেকে বাঁচার তাই সময় থাকতে আপনাদের প্রত্যেককে সতর্ক হতে হবে এবং কোরালক্যাল ডি অতিরিক্ত সেবন করা বাদ দিয়ে দিতে হবে।
আশা করছি আপনারা সকলে বুঝতে পেরেছেন কোরালক্যাল ডি এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে। এই ওষুধ নিয়মিত সেবন করতে থাকলে আপনারা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন আপনাদের পর্যন্ত হতে পারে তাই এখনই সময় থাকতে সাবধান হন এবং অতিরিক্ত পরিমাণ কোরালক্যাল ডি সেবন করা বাদ দিয়ে দিন।
গ্যাস পেট ফাঁপা এগুলো স্বাভাবিক কিন্তু অতিরিক্ত ভিটামিন ডি সেবন করতে থাকলে কি দিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায় কারণ ভিটামিন দিয়ে শরীরে রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রা কি বাড়িয়ে দেয় আর শরীরে যখন ক্যালসিয়ামের মাত্রা অনেক বেড়ে যায় তখন এই ক্যালসিয়ামগুলো ধীরে ধীরে যুক্ত হয়ে এক একটি পাথর তৈরি হয়।।
তাই অতিরিক্ত পরিমাণে কোরালক্যাল ডি সেবন করা যাবেনা অতিরিক্ত পরিমাণে সেবন করার স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি স্বরূপ হতে পারে। অতিরিক্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি কিংবা কোরালক্যাল ডি সেবন করতে থাকলে কিডনিতে পাথর হতে পারে। কিডনিতে পাথর একটি নিঃসন্দেহে ভয়াবহ রোগ তাই আপনারা এখন থেকে সাবধান হয়ে যান এবং এই ঔষধ অতিরিক্ত পরিমাণে সেবন করা বাদ দিয়ে দিন।
অনেক সময় দেখা যায় অতিরিক্ত সেবন না করলেও কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে এই সমস্যা তৈরি হয়। তাই যদি কোরালক্যাল ডি সেবন করার পরে ঘনঘন প্রস্রাব কিংবা প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া তৈরি হয় তখন থেকেই এই ওষুধ সেবন করা বাদ দিয়ে দিতে হবে। আশা করছি আপনারা সকলে বুঝতে পেরেছেন কোরালক্যাল ডি এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে।
আরো পড়ুন: হেপাটাইটিস সি এর টেস্ট খরচ কত বাংলাদেশ | সবচেয়ে কম টাকায়
কোরালক্যাল ডি খাওয়ার নিয়ম
যদি আপনি এই সমস্যা থেকে বাঁচতে চান তাহলে আপনাকে জানতে হবে কোরালক্যাল ডি খাবার নিয়ম সম্পর্কে সঠিক নিয়মে এই ঔষধ সেবন করলে আশা করছি আর কোন ক্ষতি হবে না। শরীরটা ভিটামিন ডি এর খাটতে দেখা দিলে বিভিন্ন রোগবালাই তৈরি হয় আবার অতিরিক্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি সেবন করলেও ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় তাই প্রশ্ন হচ্ছে কিভাবে কোরালক্যাল ডি সেবন করলে কোন ক্ষতি হবে না এবং উপকার পাওয়া যাবে??
কোরালক্যাল ডি খাবার সঠিক নিয়ম হল খাবার খাবার পরে এই ওষুধ খেতে হবে। বিশেষ করে দুপুরে খাবার গ্রহণের ৫ থেকে ১০ মিনিট পর কোরালক্যাল ডি ক্যালসিয়াম ভালোভাবে শোষিত হবে।
খালি পেটে কোরালক্যাল ডি ট্যাবলেট খাওয়া যাবে না । দুপুরে কিংবা রাতে ভাত খাওয়ার পরে কোরালক্যাল ডি ট্যাবলেট সেবন করতে হবে। যদি খালি পেটে এই ঔষধ সেবন করেন তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে।
প্রতিদিন কয়টা কোরালক্যাল ডি ট্যাবলেট খেতে হবে
প্রতিদিন অন্তত একটা কোরালক্যাল ডি অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে তাই প্রতিদিন একটা ট্যাবলেট যথেষ্ট। যদি শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব খুব বেশি থাকে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে দিনের দুইটা সেবন করতে পারেন তবে প্রতিদিন ১ টা কোরালক্যাল ডি ট্যাবলেট সেবন করাই উত্তম এতে কিডনিতে কোন চাপ পড়বে না।
এইটা বেট গুড়ো করে কিংবা পানির সাথে গুলিয়ে নয় বরং সাধারণভাবে পানির সাথে গিলে খেতে হবে।কোরালক্যাল ডি ট্যাবলেট খাওয়ার পর কিংবা খাওয়ার আগে চা কফি কিংবা সফটওয়্যার ড্রিঙ্ক এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।
শুধুমাত্র ওপরের এই কয়েকটি নিয়ম অনুসরণ করে এই ট্যাবলেট সেবন করলেই কোন ক্ষতি হবে না এবং কোনো রকম ক্ষতি ছাড়াই আপনারা উপকার লাভ করতে পারবেন।কোরালক্যাল ডি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী এটি ভিটামিন ডি এর হাট থেকে পূরণ করে এবং শরীরকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে।
উপসংহার: কোরালক্যাল ডি এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ১০ টি জানুন আজকেই
আজকের আর্টিকেলে আপনাদের সাথে আলোচনা করলাম কোরালক্যাল ডি এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং কোরালক্যাল ডি খাওয়ার নিয়ম। কোরালক্যাল ডি খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জানতে এই আর্টিকেলটির সম্পূর্ণ দেখুন যদি আপনি সেবন করেন তাহলে আপনার কি কি ক্ষতি হতে পারে সেই সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
আশা করছি আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনারা প্রত্যেকে বুঝতে পেরেছেন কোরালক্যাল ডি খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে এবং এই ঔষধটি ভুল নিয়মে সেবন করলে কি কি ক্ষতি হতে পারে। আর কোন বিষয়ে আপনাদের আর্টিকেল প্রয়োজন সেই বিষয় কমেন্ট বক্সে জানাতে কিন্তু ভুলবেন না ধন্যবাদ।